প্রথম পর্ব
সৌম্য দৌড়চ্ছে ট্রেনটার সাথে। আর একটু হলেই ধরে ফেলবে। ট্রেনটাও ক্রমশ গতি বাড়াচ্ছে। সৌম্যর সাথে পাল্লা দিয়ে একটা প্রতিযোগিতায় নেমেছে ১২বগির লোকালটা। আস্তে আস্তে ওর চোখের সামনে দিয়ে ৭টা ১২র সুপার টা বেরিয়ে চলে গেল পাণ্ডুয়া স্টেশন ছেড়ে। সৌম্যর কানে লোকাল গাড়ি চলে যাবার একটা বৈদ্যুতিক শব্দ চিঁ চিঁ করে বাজতে লাগল। হাঁপাতে হাঁপাতে একটা বেঞ্চে বসে পড়লো ও। ব্যাগ থেকে বোতল টা বের করতে করতেই একটা ছায়া ওর ওপর পড়লো।
“রানিং ট্রেনে উঠতে গেলে ফাইন দিতে হয় জানেন না?” একটা মধুর কিন্তু করা মহিলা কণ্ঠে একটু চমকেই ওঠে সৌম্য।
“আমি তো উঠি…” কথা থেমে যায় সৌম্যর। সামনে ঘুরে ও দেখে একজন বছর ৩০এর মহিলা রেলপুলিস ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। মাঝারি উচ্চতা, বাদামি গায়ের রং, কালো চুল বাধাঁ একটা খোপায়। অবাক গলায় বলে, “ঝুমা দি?”
মহিলার মুখে একটু অবাক ভাব আসে প্রথমে, তারপর সেটা একটা হাঁসি তে পরিবর্তন হয়। “আরে সৌম্য যে? কতদিন পর…” ঝুমাদি হচ্ছে রণজিৎদার স্ত্রী; রণ দা আমার মামারদের পাশের বাড়ির ছেলে। ৩ বছর আগে ওর আর ঝুমাদির বিয়ে হয়। আমি ছোটবেলা থেকে মামারবারিতেই মানুষ হয়েছি। ওদের বিয়ের একবছর পর কলেজ পাশ করে একটা ছোট চাকরি নিয়ে নিজের মত মফস্বলে থাকতে শুরু করেছি, বাপ-মা এর পুরনো ভিটে তে। “এরম দৌড়োয় কেউ গাড়ি ধরতে? অ্যাকসিডেন্ট হতে কতোখন লাগে?” ঝুমাদির কথায় সম্বিত ফিরে পেলাম।
“না আসলে, এটা ফেল করলে, নৈহাটির কানেকটিং গাড়ি টা মিস হয়ে যায়।”
“মিস হয় তো কি হয়েছে? প্রাণ আগে না চাকরি? নাও এবার ওঠো…”
“কোথায়?” – একটু ভ্যাবাচাকা খেয়ে জিজ্ঞেস করি। ঝুমাদি হাঁসে।
“আজ তোমার অফিস যাওয়া হবে না।”
“কেন?”
“থার্ড লাইনের কাজ হচ্ছে। এখন সারাদিন গাড়ি বন্ধ থাকবে।”
আমি হতাশ হয়ে কপালে হাত ঠেকালাম। কয়েকদিন আগেই শুনেছিলাম যে ২৪তারিখ থেকে লাইনে কাজ হবে। কিন্তু ২৪ যে আজকে সেটা মাথায় ছিল না। আজকে তাহলে অফিস কামাই করা ছাড়া আর গতি নেই। একটু রাগ হল নিজের ওপর। রোজ রাতে এত দেরি হয়ে যাচ্ছে শুতে, যে সকালে উঠতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে গত ১৫ দিনে ২বার গাড়ি ফেল করলাম। এবার থেকে রাত্রে সময় মত শুতে হবেই। যত বই পোরা, পানু দেখা, হ্যান্ডেল মারা সব জলদি শেরে ফেলতে হবে। দরকার রাতের খাবার ৮টার সময় খেয়ে নেব কিন্তু টাও এবার রুটিনটা ঠিক করতে হবে।
“কি সৌম্য? কি হয়েছে? কি ভাবছ এত?” ঝুমাদির গলা আমার ভাবনা থামিয়ে দিলো।
“শুধু শুধু নিজের দোষে অফিস টা কামাই হয়ে গেল…”
“ভালই হল। আমার সাথে দেখা হয়ে গেল।”
আমি নিজের চিন্তায় ঝুমাদির খবর নিতেই ভুলে গেছি।
“তুমি এখানে কবে থেকে?”
“এক মাস ও হয় নি। এই তো ৭ তারিখে জয়েন করেছি।”
“ও তাহলে তো সবে দু হপ্তা। congratulations. সরকারি চাকরি। আবার central govt. মিষ্টি খাওয়াতে হবে, না হলে ছাড়ব না।” হাসতে হাসতে বলি আমি। বেশ ভাল লাগছে এবার; প্রায় ২ বছর পর পুরনো কারোর সাথে দেখা হল।
“সবাই তো শুধু মিষ্টি মিষ্টি করে যাচ্ছে। আর আমি এইখানে খেটে মরছি। রণ টাও নিজের চাকরি বাঁচাতে ২ দিন থেকেই পালালো আসানসোল।”
“রণদা আছে কেমন?”
“ওই আছে। চাপ প্রচুর ওর, একটু চিৎকার করতেও খাড়াপ লাগে।” বলে হাঁসে ঝুমাদি। “তুমি কোথায় থাকো?”
“লাইন ধরে গেলে ১০মিনিট হাঁটা। আমার ঘরের পর সব খালি, শুধু ধানজমি। তুমি কি ভাড়া থাকছ?”
“হ্যাঁ। এখন ওখানেই যাবো। তুমি ও যাবে আমার সাথে। অফিস তো আজ ছুটি।”
আমার কাঁধ ধরে প্রায় তুলে দেয় ঝুমাদি। “চুরি করা ছুটি টাও দেখছি তুমি কাজ করিয়ে নেবে। দাদু বলতো বাঘে চুলে ১৮ঘা পুলিসে চুলে ৩৬।” আমার কথায় ঝুমাদি বেশ জোরেই হেঁসে উঠল।।
আমরা স্টেশনের বাইরে এসে বাজারের উল্টো দিকে হাঁটতে লাগলাম, আমার বাড়িটাও এই দিক দিয়েই যেতে হয়।। ঝুমাদি ওর চাকরিটা কতো টা অপ্রত্যাশিত ভাবে হয়ে গেছে সেই গল্প করছে। রাস্তার ভিড়ের জন্যও আমি ওর পেছনে হেঁটে যাচ্ছি। ঝুমাদিকে এই পোশাকে বেশ লাগছে দেখতে। ওর কোমরের দুলুনি আমাকে হাল্কা একটা নেশার মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে যেন। প্যান্টের টাইট ফিটিংস এর দরুন পাছাটা যেন হাতছানি দিচ্ছে। ঈশ কি ভাবছি আমি? মাথা টা যাচ্ছে আমার একা থাকতে থাকতে।
“এই বাড়িটা। নিচের তলায় ২ জন স্কুল টিচার থাকে। ওপরে আমি।”
জায়গাটা বেশ নিরিবিলি, বাড়িটা ছিমছাম। বাইরে দিয়ে করা সিঁড়ি বেয়ে আমরা ওপরে উঠলাম। ঝুমাদি দরজা খুললো। বেশ বড় জায়গা, জিনিস বেশি নেই, কিছু কার্ডবোর্ড বাক্স এখন খোলা হয় নি। ঢুকেই পাখা টা চালিয়ে দিলো ঝুমাদি। বিছানা তে বসল। আমি একটা চেয়ার টেনে বসলাম। ব্যাগ টা মাটি তে, রেখে দিলাম। মিনিট কুড়ি গল্প চলল। আমার যাবতীয় খবর নিলো ঝুমাদি, মামাদের, রণদার খবর আমাকে জানালো। আমি মামারবাড়ি ছাড়ার পর খুব একটা যোগাযোগ রাখিনি আর ওদের সাথে। অনেক কথার পর ঝুমাদি চা করতে গেল। একটু পরেই ফিরে এসে বলল, “কফি খাবে?” আমি কিছু বলার আগেই বলল, “আমি নিয়ে আসি কফি কিনে। বস তুমি।”
“ধুর আমি নিয়ে আসছি। তুমি দাঁড়াও।” বলে আমি উঠে পরলাম। মিনিট পাঁচেক এর মধ্যে কফি নিয়ে চলে এলাম। দরজা দেখলাম ভেজানো। ঢুকে ঝুমাদি কে দেখতে পেলাম না। নাম ধরে ডাকলাম, একবার দুবার, কোন সারা নেই। একটু জোরেই ডাকলাম তৃতীয় বার। একটা শোঁ শোঁ শব্দ থেমে গেল, বাথরুম এর ভিতর থেকে ঝুমাদির গলা এলো, অস্পষ্ট কথা, বোঝা গেল না। আমি একটু এগিয়ে গেলাম বাথরুমের দরজার দিকে, “কি বলছ?”
“রান্নাঘরে দুধটা বসানো আছে। কফিটা দাও। আমি বেরচ্ছি একুনি।”
“ঠিক আছে”
আমি রান্নাঘরে গিয়ে কফিটা বানিয়ে ফেললাম। দুটো কাপে ঢেলে নিয়ে এলাম রুমে। প্রায় সাথে সাথেই ঝুমাদি বের হল। স্নান করেছে ও। চুল হাল্কা ভুজে, সকালের আলো তে চক চক করছে। একটা হাল্কা সবুজ নাইটি পরে আছে ঝুমাদি।
“কফি রেডি? বাহ। এই নাইট ডিউটির পর স্নান না করলে মাথাটা ধরে যায়।” বলতে বলতে একটা ওড়না জোড়ায়। বিছানাতে বসে কফিতে সিপ দেয়। আমি যদি ও কফি খুব একটা করি না, কিন্তু আজকের কফিটা বেশ ভাল হয়েছে।
“দারুণ বানিয়েছ তো।”
“ওই আরকি”
“নিজেই রান্না করো সৌম্য?”
“হ্যাঁ, ডাল ভাত করে নি দুটো।”
“ভাল… আমি দুএকদিন হোটেলে খেয়ে শরীর খাড়াপ করলাম, তারপর থেকে রান্না টাই করছি। ওই সেদ্ধ ভাত, না হয় খিচুরি। কাল বিকেলে মাংস এনেছি, আজ করবো। তোমাকে কিন্তু আজ ছাড়ছি না। খেয়েদেয়ে বিকেলে যাবে।”
“কি বলছ ঝুমাদি? শুধু শুধু তোমার ঝামেলা। আমি না হয় অন্য এক দিন খেয়ে যাবো।”
“না না কিচ্ছু অজুহাত চলবে না। অনেকদিন পর একটা মানুষ পেয়েছি কথা বলার।”
“তোমার কথাই হবে, কিন্তু একটা শর্তে।”
“কি শুনি?”
“আমি চিকেন টা করবো।”
“বেশ! এত আর ভাল হল।” বলে খিল খিল করে হেঁসে ওঠে ঝুমাদি, “আমি তাহলে আজ জিনিস গুলো সব গোছগাছ করে ফেলব। আজ করছি কাল করবো করে আর হয়ে উঠছে না।”
একথা সেকথা বলতে বলতে ১০টা বেজে গেল। মধ্যে ঝুমাদি একটু মুরি চানাচুর নিয়ে এসেছিল। খেতে খেতেই গল্প করছিলাম আমরা। রণদা আর ঝুমাদির প্রেম কলেজ থেকে। বিয়ের আগেই আমার ঝুমাদির সাথে আলাপ হয়, বেশ আড্ডাও মেরেছি আমরা তিন জনে মিলে। বিয়ের পর ঝুমাদি মাঝে মাঝেই আমাদের বাড়ি আসতো দুপুর নাগাদ। রিনা আর ঝুমাদি প্রচুর গল্প করতো। আমি কলেজ থেকে ফিরলে আমি ও আড্ডা মারতাম ওদের সাথে। ঝুমা দি প্রচুর বই পড়ত, গল্প, কবিতা উপন্যাস সব। ওর থেকে নিয়ে আমি আর রিনাও অনেক কিছু পরে নিয়েছি সেই সময়। রিনা আমার মামার মেয়ে, আমার থেকে বছর দেড়েকের বড়। ঝুমাদি ইংরাজি বাংলা সব বই ই পড়ত, কনভেন্টে পরেছে ও। আমি একটা দুটো ইংরেজি বই পরতাম মাঝে সাঁঝে ওর থেকে নিয়ে, অস্কার ও্যাইলড, আল্যান পো, জোসেফ কনরাড, ডী এইচ লরেন্স মায় আমাদের ঝুম্পা লাহিড়ী, আরভিন্দ আদিগা সব ই ঝুমাদির সূত্রেই পরা।
“পরার সময় পাচ্ছ?”
“বের করে নিচ্ছি। ডিউটি তে চাপ তো কিছু নেই, বসে বসে গ্যাঁজানো। ফোনে কিছু কিছু পরে নিচ্ছি। আর নাহলে বাড়িতে একটু সময় বের করে পড়ছি। তুমি কি করছ?”
কি যে করছি সেটা কি করেই বা বলব ঝুমাদিকে। গত দুমাসে হয়তো দুপাতা পরেছি সাকুল্যে। অফিস থেকে ফিরে, রান্না করে যে সময়টা পাই হয় বাজে সিরিজ দেখি না হয় পর্ণ দেখি। মাঝে মাঝে তো রাতে ২ ঘণ্টা তে ২ বার হ্যান্ডেল মারি। মন ভাল থাকলে হ্যান্ডেল মারি, মন খারাপ থাকলে, প্রেম জাগলেও, বিরহেও। আমার সব কিছুর এখন এক ওষুধ হ্যান্দেল মারা। এই কথা তো আর কাউকে বলা যায় না।
“পরা হয় না খুব একটা… গত বছরের শেষে কিছুদিন একটু কবিতা পরছিলাম ব্যাস…”
“পাহাড় শিখর ছেড়ে মেঘ ঝুঁকে আছে খুব কাছে
চরাচর বৃষ্টিতে শান্ত
আমি গম্ভীর উদাসীন ব্রহ্মপুত্রর পাশে চুপ করে দাঁড়াই
জলের ওপরে সব জল-রং ছবি
নারীর আচমকা আদরের মতন স্নিগ্ধ বাতাস-
এই চোখ জুড়নো সকাল, অদ্ভুত নিথর দিগন্ত
মনে হয় অজানা সৌভাগ্যের মতন
তবু সুন্দরের এত সামনে দাঁড়িয়ে হঠাৎ
আমার মন খাড়াপ হয়ে যায়
মনে হয়, এ জীবন অন্যরকম হবার কথা ছিল।”
একটানা কবিতাটা বলে যায় ঝুমাদি। আগেও করতো এরম, আমি আর রিনা বসে শুনতাম বিহ্বল হয়ে।
“কার এটা?”
“সুনীল… দাঁড়াও সুন্দর কাব্যগ্রন্থ… এটার নাম অন্যরকম।”
“অসাধারণ” আমি চুপ করে বসে থাকি। ঝুমাদি উঠে পরে বিছানা থেকে।
“আমার হাতে হাতে একটু জিনিস গুলো গুছিয়ে দাও। তারপর আমি তোমার রানার ফাইফরমাশ খাটবো।”
আমি উঠে দাঁড়াই। এক এক করে আমরা বাক্সগুলো খুলে সেগুলো থেকে জিনিস বের করে রাখতে থাকি। কিছু টুকিটাকি ঘরের জিনিস, আর বেশির ভাগ বাক্স বই এ ভরা। একটা ছোট স্টিলের বই এর র্যাক কিনেছে ইতিমধ্যে ঝুমাদি। সেটার ৩টে তাক ভোরে গেলো আস্তে আস্তে। মোটামটি গোছানো শেষ।
“শুধু পর্দা গুলো লাগিয়ে নিলে ডান।… যাহ!”
পাখাটা বন্ধ হয়ে গেলো কথার মধ্যে। একবার লাইন গেলে চট করে আসে না এদিকে।
“গেলো সব। কাজ করে একটু শান্তি পাওয়াও দায়” বলতে বলতে ঝুমাদি ওড়না টা খুলে সেটা দিয়েই মুখের ঘাম মোছে। তারপর পর্দা গুলো নিয়ে লাগাতে শুরু করে। আমি ও হাত লাগাই কাজে।
“এই বাক্স গুলোর কি করবে?”
“ওই ওপরের ইয়েটা তে তুলতে পারবে?” বাথরুমের ওপরের কুলুঙ্গির দিকে ওর আঙ্গুল দেখায়। আমি চেয়ার টা টেনে সেটার ওপর উঠে দাঁড়াই। হাতের বাক্সটা ভেতরে ঠেলে দি। ঝুমাদি বাকি বাক্স গুলোকে জড়ো করে এনে একটা একটা করে আমার হাতে দেয়। নিচের দিকে তাকালে নাইটির ওপর দিয়ে ওর ক্লিভেজ দেখা যাচ্ছে। আমি চট করে চোখ সরিয়ে নিলাম। শেষের কয়েকটা বাক্স একটু ছোট, ঝুমাদি ছোট বাখসগুলোকে একতা বড় বাক্সের মধ্যে ভরছিল নিচু হয়ে। কিল্ভেজ আরও গভীর এবার। চেষ্টা করেও চোখ সরাতে পারলাম না। গভীর গিরিখাতের মধ্যে দিয়ে দুটো ঘামের ফোঁটা চলে যাচ্ছে আরো গভীরে অবিদিত উপত্যকার দিকে। আমার শরীরের রক্তের গতি দিক পরিবর্তন করছে, আমি টের পাচ্ছি আমার ধমনী থেকে রক্ত এসে জমা হচ্ছে পুংজননেন্দ্রিয়তে, আমার অনিচ্ছা সত্ত্বেও। ঝুমাদির কাজ শেষ করে বাক্স-ভর্তি বাক্স এগিয়ে দেয় আমার হাতে স্মিত হেঁসে। রক্তচলাচল স্বভাবিক করে ওই হাঁসি, প্রাণ ফিরে পাই আমার শরীরে।।
“আমাকে কি করতে হবে?” রান্নাঘরে এসে জিজ্ঞেস করে ঝুমাদি। ওর হাতে একটা পাত্রে ম্যারিনেট করা চিকেন।
“টমেটো, লঙ্কা, আর আদা রসুনের এঁর একটা পেস্ট করে দাও।” পেঁয়াজ কাটতে কাটতে আমি জবাব দিলাম।
“সৌম্য তুমি তো একেবারে ঘেমে গেছো… রণর কিছু জামা আছে। এসো চেঞ্জ করে নেবে।”
“না থাক না… কিছু হবে না…”
“আরে শুধু রান্না করতে গিয়ে জামাটা নষ্ট করবে। এসো।”
রণদার একটা হাফপ্যান্ট আর গেঞ্জি বের করে হাতে দেয়। বাথরুমে ঢুকে পোশাক ছাড়তে শুরু করেছি, বাইরে থেকে ঝুমাদির গলা পেলাম, “তোমার কাপড় গুলো ভেতরেই রেখে দাও। জায়গা করা আছে। আমার উনিফর্মটা দরকার হলে বালতিতে রেখে দিয়ো।”
“ঠিক আছে” আমার চোখ যায় ওর উনিফর্মের দিকে। ওটা বালতি তে রাখতে গিয়ে একটা কিছু মাটিতে পরে যায়। তাকিয়ে দেখি ঝুমাদির ব্রা, কালো রঙের। তুলে সেটাকেও বালতিতে রেখে দি। ওটার ছোঁয়াতে আবার সেই আগের দৃশ্য মাথার মধ্যে ঘুরপাক খেতে লাগলো। রক্তের গতি বিশৃঙ্খল হবার আগেই গেঞ্জি আর প্যান্টটা পরে বেরিয়ে এলাম। রণদা আমার থেকে চেহারায় একটু ছোট, টাই গেঞ্জিটা একদম ফিটিং হয়েছে আর প্যান্টটা একটু ছোট। রান্নাঘরে গিয়ে বুঝলাম, একটা গোলমাল করেছি। তাড়াহুড়োতে জাঙ্গিয়া টাও খুলে রেখেছি। ঝুমাদি রান্নাঘরের মেঝেতে বসে কাটাকুটি শুরু করে দিয়েছে। ঘামে ওর পিঠের দিকে নাইটি ভিজে গেছে। পিঠের সাথে সেঁটে গেছে সেই জায়গাটা। আমি যেতে আমার দিকে মুখ তুলে তাকালো।
“বাহ বেশ হয়েছে তো” হেঁসে বললো। আমি পেঁয়াজ কাটতে শুরু করলাম। ঝুমাদি আমার দিকে মুখ করেই বসে আছে। বটি তে কাটার জন্য একটু যখন ঝুঁকছে ওর গভীর ক্লিভেজ দেখা যাছে। ব্রা পরে নেই ঝুমাদি। ঘাম জমছে বুকের খাঁজের ভিতর। আমি পেঁয়াজ কাটতে কাটতে ঝুমাদির বুক দেখে যাচ্ছি আড়চোখে। নাইটি তুলে একবার মুখের ঘাম মুছল ঝুমাদি। বুকের কাছের নাইটির অংশ সেই ঘামে ভিজে গেলো। আমি ও ঘামতে শুরু করেছি। প্যান্টের ভেতর আমার পুরুষাঙ্গ গরম হয়ে গেছে। হাত দিয়ে সেটাকে একদিকে ঠেলে একটু জায়গা দিলাম। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলাম বোঝা যাছে কিনা। প্যান্টের চেকটার জন্য একটু সময় লাগবে বুঝতে।
“শিলনোড়া টা দাওতো। নিচে আছে, গ্যাসের পাশে।” আমি নিচু হয়ে একটু সময় নিয়ে বের করে আস্তে আস্তে আস্তে ঝুমাদির সামনে রাখলাম। ঝুমাদি কি বুঝতে পারলো? একবার তাকালাম ঝুমাদির দিকে, এক মনে একটা বাটি থেকে জল নিয়ে শিলনোড়া টা ভেজাচ্ছে। আম্র পেঁয়াজ কাটা শেষ। করাই গ্যাসে চাপালাম। পেঁয়াজ কশাতে শুরু করলাম। বাটনা চলছে তখন। গ্যাস চালু হতে গরমটা বেড়ে গেছে। দরদর করে ঘামছি আমি। ঝুমাদির ও একি হাল। ঘামে ওর মুখ ভিজে। নাইটিটা বেশির ভাগ জায়গাতে শরীরের সাথে চিটে গেছে। বুকের ভাঁজটা আর সুন্দর আর উর্বর লাগছে ঘামে ভিজে, বুকের কিছু অংসেও নাইটি চেপে বসে আছে ভিজে যাওয়ায়। ডান দিকের বোঁটা টা বোঝা যাচ্ছে যেন! হ্যাঁ হাল্কা খয়েরি রং সবুজের ওপর এবার স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। আমার শরীরের যেখানে যত রক্ত ছিল, সব পড়িমরি ছুটে এলো যুদ্ধের ভোঁ শোনা রেফিউজিদের মতো। আমার তলপেটের নিচের তাঁবু উন্মোচিত হয়ে আছে দৃষ্টিকটু ভাবে। ঝুমাদির নিটোল বুক, তার গভীর খাঁজ, খয়েরি বোঁটা সব আমার রক্তকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। আমি প্রাণপণ চেষ্টায় পেঁয়াজটা নাড়ছি।
“এই নাও।” বলে হাত বাড়িয়ে বাটনা টা আমার দিকে এগিয়ে দেয় ঝুমাদি। বাটি নেবার সময় ওর হাত স্মিত ভাবে স্পর্শ করে আমার হাতকে। ঝুমাদি উঠে শিলনোড়াটা পরিষ্কার করতে থাকে আমার পাশে দাঁড়িয়ে, বেসিনের ধারে। তারপর নিচু হয়ে সেটা রাখে আমার পায়ের তলায় গ্যাসের পাশে। ওর হাত আমার উরু ছুঁয়ে যায় আলতো করে।
“কারেন্টটা না এলে আর থাকা যাবে না” বলতে বলতে মুখে চোখে জলের ছিটে দেয় ঝুমাদি। একটু জল নিয়ে গলাটাও ভিজিয়ে দেয়। জলের ফোঁটাগুলো তার নাইটির ওপরের অংশকেও ছাড়ে না, ভিজিয়ে দিয়েছে তার পুরো বুকটাই। আমি শুধু হাঁ করে চেয়ে থাকি, কিছু বলতে পারি না।
“গরম তো তোমার ও ভালোই লাগছে, কি?” হেঁসে বলে ঝুমাদি। আমি একটু আমতা আমতা করি।
“হ্যাঁ মানে ওই…” ঝুমাদি আমার গা ঘেঁষে দাঁড়ায়। ওর বুক আমার বাহুতে স্পর্শ করছে। আমার কানের কাছে মুখ এনে বলে ঝুমাদি,
“চুমু খাবে?”
আমি বিস্ফারিত চোখে ঝুমাদির দিকে তাকাই। আমার কাঁধ ধরে আমাকে আস্তে আস্তে ঘুরিয়ে ওর মুখোমুখি করায় ও। ওর শরীর আমার শরীরের সাথে প্রায় মিশিয়ে দিয়ে, এক হাত দিয়ে আমার মাঠে আস্তে করে নামিয়ে নিজের ঠোঁট ছোঁয়ায় আমার ঠোঁটে।
( চলবে )
This story ঝুমাদি – পর্ব ১ appeared first on new sex story dot com